২০২৫ সালের বোরো মৌসুম থেকে ১৪ লাখ টন চাল ও ৫ লাখ টন ধান সংগ্রহের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। গতবারের তুলনায় এবারের মৌসুমে ধান ও চালের সংগ্রহমূল্যও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছে খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র।
সূত্র জানায়, আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) সভায় এ লক্ষ্যমাত্রা ও সংগ্রহমূল্য চূড়ান্ত করা হবে।
সরকার বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে সরবরাহের জন্য দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে চাল ও গম সংগ্রহ করে থাকে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, অতিদরিদ্রদের খাদ্য সহায়তা, কাজের বিনিময়ে খাদ্য, ওএমএস, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে বিক্রি এবং জরুরি রেশন ও ত্রাণ সরবরাহের জন্য এসব খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হয়। এতে বাজারে সরকারি সরবরাহ বজায় থাকায় চালের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
সরকার অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সবচেয়ে বেশি ধান ও চাল সংগ্রহ করে থাকে বোরো মৌসুমেই। ২০২৪ সালের বোরো মৌসুমে ১১ লাখ টন সিদ্ধ চাল, ১ লাখ টন আতপ চাল এবং ৫ লাখ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল সরকার। ওই সময় প্রতি কেজি ধান ৩২ টাকা, সিদ্ধ চাল ৪৫ টাকা এবং আতপ চাল ৪৪ টাকায় সংগ্রহ করা হয়েছিল।
২০২৫ সালের আমন মৌসুমে সরকার প্রতি কেজি ধান ৩৩ টাকা, সিদ্ধ চাল ৪৭ টাকা এবং আতপ চাল ৪৬ টাকা দরে সংগ্রহ করে। ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
তবে বাজারমূল্যের তুলনায় সরকার নির্ধারিত সংগ্রহ মূল্য কম হওয়ায় আমন মৌসুমে খাদ্য অধিদপ্তর লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান ও চাল সংগ্রহ করতে পারেনি। ফলে অভ্যন্তরীণ ঘাটতি পূরণে সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরকার ৮ লাখ টন চাল বিদেশ থেকে আমদানির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, ৭ এপ্রিল পর্যন্ত ৫.১৮ লাখ টন চাল আমদানির দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে, যার বেশিরভাগ চাল ইতোমধ্যে দেশে পৌঁছেছে। এ ছাড়া ৪.০৮ লাখ টন গম আমদানির প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, আমন মৌসুমে সরকার ৫.৫০ লাখ টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও সংগ্রহ হয়েছে ৪.৩৫ লাখ টন। আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে ৮৪ হাজার ৬১ টন, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ টন। ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩.৫০ লাখ টন, কিন্তু সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২৬ হাজার ৭১৪ টন।
এ প্রসঙ্গে খাদ্যসচিব মো. মাসুদুল হাসান টিবিএসকে বলেন, “টানা চার দফা বন্যার কারণে সিলেট, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জসহ হাওর অঞ্চল এবং চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর এলাকায় কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ধান সংগ্রহ সম্ভব হয়নি। এছাড়া কৃষকের বাজারজাত করা ধানে সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা না থাকায় সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হয়।”
সরকারের ধান ও চাল সংগ্রহমূল্য নির্ধারণ করা হয় ধানের উৎপাদন খরচের ভিত্তিতে। কৃষি মন্ত্রণালয় সেই খরচ নিরূপণ করে।
এ বিষয়ে কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান টিবিএসকে বলেন, “সকল ব্যয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করে ধান ও চালের উৎপাদন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী সংগ্রহমূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে, যাতে কৃষক ন্যায্য মূল্য পান এবং ভোক্তার ওপর অতিরিক্ত চাপ না পড়ে।”
কৃষি মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, আমনের তুলনায় বোরোর উৎপাদন ব্যয় বেশি। সেই কারণে সরকার এবারের মৌসুমে আমনের তুলনায় কিছুটা বেশি দামে সংগ্রহ পরিচালনা করবে।
তিনি আরও বলেন, “এপ্রিলের শেষ দিকে বোরোর ধান বাজারে আসা শুরু করবে এবং তা চলবে জুনের শেষ পর্যন্ত।”
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, ৮ মার্চ ঢাকার খুচরা বাজারে চায়না ও স্বর্ণা জাতের মোটা চাল প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় এবং মাঝারি মানের চাল ৫৮ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, পাইকারি পর্যায়ে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) মোটা চাল ২,৩৫০ থেকে ২,৫০০ টাকায় এবং মাঝারি চাল ২,৯৫০ থেকে ৩,১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
টাংগাইলে ঘাটাইল উপজেলায় এই কার্যক্রম এর শুভ উদ্ভোদন করেন ইউ এন ও জনাব আবু সাইদ ।
তিনি জানান, ঘাটাইল উপজেলায় ধান=১৫২৩ মেঃটন ও চাল =১৩৩২৪ মেঃটন বরাদ্দ পাওয়া গিয়াছে। ধানের ক্রয় মূল্যপ্রতি কেজি ৩৬/- ও চালের ক্রয়মূল্য প্রতি কেজি ৪৯/- টাকা।অদ্য২৪/৪/২৫ খ্রিস্টাব্দ তারিখ মেসার্স মক্কা অটোমেটিক এগ্রো ফুড, প্রোঃ মোঃ আলমগীর হোসেন এর নিকট হইতে ২০.০০০ মেঃটন চাল সংগ্রহ করা হয়।