নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের ইন্টারনেট সেবার খরচ বাড়তে যাচ্ছে প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সরকার প্রস্তাবিত ‘টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক এবং লাইসেন্সিং নীতি ২০২৫’-এর খসড়ায় বিভিন্ন ফি ও চার্জ আরোপের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের মূল্য বাড়বে, পাশাপাশি ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এফটিএসপি) ক্রয়মূল্যও বাড়বে প্রায় ১৪ শতাংশ।
আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালির রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত ‘টেলিকম খাতের খসড়া গাইডলাইনে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের মূল্য বৃদ্ধি ও দেশীয় উদ্যোক্তা সুরক্ষাহীনতার প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ আমরা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন আইএসপিএবি’র মহাসচিব নাজমুল করিম ভূঁইয়া, প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মো. আমিনুল হাকিম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি নেয়ামুল হক খান, যুগ্ম-মহাসচিব-১ মো. মাহবুব আলম রাজু, যুগ্ম-মহাসচিব-২ ফুয়াদ মুহাম্মদ শরফুদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ মঈন উদ্দিন আহমেদ এবং পরিচালকবৃন্দ রাশেদুর রহমান রাজন, মো. মিঠু হাওলাদার, সাব্বির আহমেদ, রাইসুল ইসলাম তুহিন, মো. জুবায়ের ইসলাম ও এ এস এম সাইফুল ইসলাম সেলিম।
আইএসপিএবি সভাপতি মো. আমিনুল হাকিম বলেন,
“নতুন টেলিকম নীতিমালার কারণে ইন্টারনেটের মূল্য অন্তত ২০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে, বাস্তবে এটি আরও বেশি হতে পারে। এদিকে অপারেটরদের ক্রয়মূল্যও বাড়বে ১৪ শতাংশ। যেখানে ৫-৬ শতাংশ মুনাফা নিয়েই ব্যবসা পরিচালনা করা কষ্টসাধ্য, সেখানে এই অতিরিক্ত খরচ বহন করা অসম্ভব। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের ব্যবসা চ্যারিটি হাউজে পরিণত হবে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন,
“বিদেশি প্রতিষ্ঠান যেমন স্টারলিংকের অ্যাকুইজেশন ফি ১০ হাজার মার্কিন ডলার (প্রায় ১২.৫ লাখ টাকা), অথচ দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্য নির্ধারিত ফি ২৫ লাখ টাকা। এই বৈষম্য সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং দেশীয় শিল্পের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।”
আইএসপিএবি সভাপতি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন,
“নির্বাচনের আগে টেলিকম খাতে যেন কোনো অস্থিরতা সৃষ্টি না হয়, সেটাই আমরা চাই। কিন্তু সরকার যেভাবে নীতিমালা প্রণয়ন করছে, এতে দেশের গ্রামীণ পর্যায়ের ইন্টারনেট ব্যবসা টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। আগামী তিন মাসের মধ্যেই অনেক স্থানীয় আইএসপি বন্ধ হয়ে যেতে পারে, ফলে বাংলাদেশ ‘ডিজিটালি শাটডাউন’-এর মুখে পড়তে পারে।”
তিনি সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন,
“দেশীয় উদ্যোক্তাদের টিকে থাকার স্বার্থে এই খসড়া নীতিমালা পুনর্বিবেচনা করতে হবে। আমরা চাই সব রাজনৈতিক দল এই বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে পদক্ষেপ নিক।”
আইএসপিএবি নেতারা বলেন, খসড়া নীতিমালার আওতায় নতুন করে আরোপিত লাইসেন্স ফি, রেভিনিউ শেয়ার ও বিভিন্ন চার্জের কারণে ইন্টারনেট খরচ বাড়বে, যা সরাসরি সাধারণ গ্রাহকের উপর প্রভাব ফেলবে। এতে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের অর্জনগুলো হুমকির মুখে পড়তে পারে।







