‘মা‘ শুধু একটি শব্দ নয়, একটি অনুভূতি, একটি ভালোবাসা, একটি আশ্রয়। সন্তানের জীবনে একজন মায়ের ভূমিকা অপরিসীম। জন্মের আগে থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে মা সন্তানের পাশে থাকেন।
“””” আমার মা””””
হইছে কি বুঝবার পারি নাই?
খালি দেখলাম পিছন থিকা
মিসাইলের মত হাছুনডা আমার দিকে উইড়া আইতাছে
আল্লার উপর ভরসা কইরা আব্বাগো কইয়া একটা চিক্কুর দিয়া
গেট ডারে খুইলা দিলাম একটা ভোঁ দৌড়
তফাতে আইয়া চাইয়া দেহি
মায়ের এলোমেলো শাড়ী আর ভেজা চুলের কঠিন মুখডা
তহনও বুঝি নাই দোষডা কি করলাম ?
মজিদ ঘর থিকা মুসুল্লিগোরে পারার দিকে যাওন দেইখা বুঝবার পারছি
মাগ্রিব এর আযান হইয়া নামাজও শেষ
“আল্লাগো আইজকা আমারে কেডায় বাচাইবো”
পারার মধ্যে আমাগো ঘরডারে থুইয়া
সাইকেলের চাহার নাহাল চারদিকে ঘুরবার নইছি
আর মনে মনে বিচরাইতাছি আব্বায় কহন আইবো ?
আল্লাগো আইজকা আমারে কেডায় বাচাইবো।
আব্বায় আর আহে না…
সাহস কইরা বুকে ছেপ দিয়া
বাঁশের চাটাইয়ের গেটডারে আলগোসতে হরাইয়া
ঘরের উঠানে চাইয়া দেহি হাছুনডা চিত অইয়া পইরা আছে।
বুকে আরেক দলা ছেপ দিয়া বিড়ালের নাহাল এক পাও দুই পাও কইরা
সোজা কল পারে…
কলডারে যেই চাপ দিছি অমনেই
মুখ দিয়া বাইর অইয়া গেলো “কুত্তার বাচ্চা”
আইজকা হাইঞ্জাকালে হারুনের লগে মারামারি করন ডা ঠিক অয় নাই।
কি করমু কুত্তার বাচ্চায় যে মায়েরে তুইলা গালি দিলো
মায়ের নামে গালি দিলে মাতাডা আমার আবার ঠিক থাহে না।
ঐ কি করস নবাবের বাচ্চা আত মুক ধুইয়া পড়বার বয়
হারিকেন ধরাইন্না আছে, আইজ রাইতে তোর খাওন নাই।
আবারও মুক দিয়া বাইর অইয়া গেলো কুত্তার বাচ্চা হারুন।
ওর জন্যেই ত এই অবস্থা !!!
বেতাডারে দাতে চাইপা সহ্য কইরা
কলপার তন সোজা টেবিলে…
দেহি পাশের টেবিলে বইনে পড়তাছে…
আমারে দেইহা মিডি মিডি হাসে।
মনডায় কইতাছে হারামজাদীর চুলের মুঠি ধইরা
একটা টান দিবার পারলে হারা জীবনের নামে হাসিডা বাইর অইয়া যাইতো।
দিছিলাম হেইদিন … মায়ে তালপাখাডা আমার পিডেই ভাংছে …
হুনলাম আব্বায় গর্জাইতে গর্জাইতে কইতাছে…
দুই টেয়া দিয়া আবার পাখা আনলাম পারলে আবার ভাইংগো…
ঐ নবাবের বাচ্চা তোর আওয়াজ আহে না ক্যা ?
আইজ গরুর রচনা মুখস্ত না অইলে …
তোরে গোয়াল ঘরে গরুর লগে বাইন্ধা রাখুম।
শুইন্না পাস থিকা বইনের আবার ফিক কইরা হাসি …
যেই চুলের মুঠি ধই … ও বাবা গো চিক্কুর মুক দিয়া বাইর অইয়া গেলো …
সাথে বইনের চিক্কুর মাগো দেহো ভায়ের হাতটা ফুইল্লা গেছে…
রান্নাঘর থিকা হাড়ি পাতিলের ঝন ঝন আওয়াজ আর
মায়ের খোলা চুলে দৌড়ে আহোন …
বাজান দেহি কি অইছে ? হাতের ফুলাডা দেইখা মায়ের কান্দন
যতই কই কিছুই অয় নাই
পইরা বেতা পাইছে মায়ে হুনে না
বইনের দিকে চাইয়া কয়
নবাবের বেটি বইয়া আছত ক্যা
রান্নাঘর তন সরিষার তেল রসুন দিয়া গরম কইরা নিয়া আয় ।।
মায়ে সারাডা রাইত আমার হিতানের পাশে বইয়া আছিলো
বিয়ান বেলায় দেহি
মায়ের একডা হাত তেলের বাটিতে আরেক হাত আমার হাতে …
বিয়ানে স্কুলে যামু মায়ে যাইতে দেয় না …
আমি চারদিকে চাই আর খুজি
“আল্লাগো আইজকা আমারে কেডায় বাচাইবো”
(টাংগাইলের আঞ্চলিক ভাষায় লিখিত)
লেখাঃ এস এম ইমরুল কায়েস রাজিব
তারিখঃ ১১-০৫-২০২০(রোজ সোমবার)