টাঙ্গাইলের মধুপুরে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও মনোনয়নপ্রত্যাশী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলীর সমর্থকেরা। শনিবার সকাল ১১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল শেষে মধুপুর বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন তিন সড়ক মোহনায় আনারস চত্বরে অবস্থান নিলে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। ফলে মধুপুর হয়ে চলাচলকারী কয়েকটি জেলার যাত্রীবাহী ও মালবাহী পরিবহন আটকা পড়ে এবং সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল থেকেই উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরে আসতে থাকেন। পরে বড় একটি মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে আনারস চত্বরে অবস্থান নেয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃত্ব দেন বিক্ষোভের সমন্বয়ক সাবেক বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন, যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান, আব্দুল লতিফ পান্না ও মনি সরকার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মধুপুর–ধনবাড়ী উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, গত ১৭ বছরে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী অন্তত ১৭টি রাজনৈতিক মামলার আসামি হয়েছেন এবং তিনবার কারাবরণ করেছেন। দলের প্রতি তার দীর্ঘদিনের নিষ্ঠা, ত্যাগ ও জনসম্পৃক্ততা থাকা সত্ত্বেও তাকে মূল্যায়ন করা হয়নি। বরং যাকে টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর–ধনবাড়ী) আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তিনি অতীতে এলাকায় তেমন সক্রিয় ছিলেন না। বক্তাদের অভিযোগ, এভাবে মনোনয়ন দিয়ে আসনটি ‘হারানোর আয়োজন’ করা হয়েছে।
তারা দাবি করেন, আসনটি পুনরুদ্ধার করতে হলে ঘোষিত প্রাথমিক মনোনয়ন বাতিল করে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলীকেই ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন দিতে হবে।
উল্লেখ্য, টাঙ্গাইল-১ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন এবার দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি টাঙ্গাইল-২ আসনের ভুয়াপুর উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা এবং বিখ্যাত আফাজ ফকির পরিবারের সদস্য। ১৯৯৬ সালে ভুয়াপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে পরাজয়ের পর ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে টাঙ্গাইল-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মধুপুরে বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন। এরপর একাধিকবার ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও বিজয়ী হতে পারেননি। এবার তিনি তৃতীয়বারের মতো মনোনয়ন পেয়েছেন।
আসনটিতে মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলীর অনুসারীরা।







