ধনবাড়ীতে ধর্ষণের চেষ্টা দুই লাখে শালিসী বৈঠকে মিমাংসা!
স্টাফ রিপোর্টার, ঘাটাইল ডট কম
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ / ৩০১ বার পঠিত
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তিন সন্তানের জনকের বিরুদ্ধে। দুই লাখ টাকায় ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে শালিসী বৈঠকে মিমাংসার চেষ্টা চালিয়েছে স্থানীয় মাতাব্বররা।
সোমবার ওই স্কুল ছাত্রীর মা বাদি হয়ে ধনবাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। উপজেলার পাইস্কা ইউনিয়নের এক গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্ত মো. মোস্তফা (৫৫) সে ওই গ্রামের মৃত জব্বার আলীর ছেলে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে মোস্তফা।
ওই স্কুল ছাত্রীর পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, গাছের পাঁকা বেল দেয়ার প্রলোভনে শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের কবরস্থানে নিয়ে যায় মোস্তফা। সেখানে গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে ধর্ষণের চেষ্টা চালালে ওই ছাত্রী ধস্তাধস্তি ও গোংরাতে থাকে। এসময় এক পথিক টের পেলে পালিয়ে যায় মোস্তাফা।
ঘটনাটি এলাকাতে জানাজানি হলে গ্রাম্য মাতাব্বর সিরাজুল ইসলাম মাষ্টার, মুঞ্জু মল্লিক (ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক), শফিকুল ইসলাম শফি, ফিরোজ আহমেদ, রিপন মিয়া ও মোকাদ্দেছ ওরফে মোক্কা গংরা শালিসী বৈঠকে দুই লাখ টাকায় ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায়। নগদ ৮০ হাজার টাকা লেনদেন হয় ওই বৈঠকে। শালিসদাররা অভিযুক্তকে আত্ম গোপনে থাকার পরামর্শ দেয়।
ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘আমার অবুঝ মেয়েকে লোভ দেখিয়ে সর্বনাশ করেছে। টাকা দিয়ে জোরকরে মিমাংসার চেষ্টা করেছে। আমি রাজি হয়নি। আমরা গরীব মানুষ। অভিযুক্তরা এখন নানা ভাবে হুমকী ও চাপ দিচ্ছে। এর সঠিক বিচার চাই।’
মিমাংসার বিষয়টি জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম মাষ্টার বলেন, ‘বৈঠকে বসে মিমাংশার উদ্যোগ নিয়ে ছিলাম। মেয়ের পরিবার প্রথমে রাজি থাকলেও পরে অন্যের প্ররোচনায় থানায় মামলা দায়ের করেছে।’
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে রিপন মিয়া বলেন, ‘শালিসী বৈঠকে সিরাজ মাষ্টার আমাকে ডেকে নিয়েছে এবং মিমাংশার সাথে থাকতে বলে।’
অভিযুক্ত মোস্তফার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ছেলে আলম মিয়া বলেন, ‘আমি বড়িতে ছিলাম না। বাবা বাড়িতে নেই। কাজ করতে বাইরে গেছেন।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, ‘লোকমুখে জেনেছি কতিপয় মাতাব্বর এটা মিমাংশা করেছে। এ ধরণের ঘটনায় অভিযুক্তের বিচার হওয়া দরকার।’
ধনবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. চান মিয়া বলেন, ‘ওই ভূক্তভোগী ছাত্রীর মা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আপনার মতামত লিখুন