নজরুল ইসলাম, ঘাটাইল ডট কম
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ / ৪৩৭ বার পঠিত
সে কালে, ঘোড়া একমাত্র যোগাযোগের বাহন অথবা মাধ্যম থাকলেও সময়ের পরিক্রমায় আজ তা অনেকটাই বিলুপ্তপ্রায়। আগে অভিজাত শ্রেণী তথা রাজা-বাদশা গণ ঘোড়া বা ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে চলতেন, এ কথা যান্ত্রিক যুগে বেমানান হলেও ইহাই যে বাস্তব সত্য তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এমনও শোনা যায়, ঘোড়া ও কবুতরের মাধ্যমে চিঠিও আদান-প্রদান হতো সে যুগে। শুধু রাজা-বাদশা নন, সাধারন মানুষও দুই বা তিন যুগ আগে ঘোড়ায় চড়েই প্রয়োজন অনুযায়ী চলতেন তার সাক্ষী অনেকেই এখনও স্মৃতিচারণ করে।
প্রভূভক্ত প্রাণীদের মধ্যে ঘোড়া বিশেষভাবে অন্যতম এ কথা অ-স্বীকার করার উপায় নেই যা ঘোড়ার ঐতিহ্য ও ইতিহাস বলে দেয়। মালিক বিপদে পড়লে ঘোড়ায় রক্ষা করার চেষ্টা বা দৌড়ে বাড়ি এসে মালিক পক্ষের লোকদের আচরণ দিয়ে জানান দেওয়া অথবা কেউ পায়ের সামনে ভুল করে পড়ে গেলে পাঁ না উঠানোসহ হাজারো কথা প্রচলন আছে ঘোড়ার প্রভূভক্তি নিয়ে।
বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে যোগাযোগের নতুন নতুন বাহন যোগ হলেও টাঙ্গাইলের ঘাটাইল, সখীপুর, মধুপুরসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় এখনও ঘোড়া পালন ও ব্যবহার সর্বদাই চোখে পরার মতো। যদিও অভিজাত শ্রেণী থেকে তা নিম্নবিত্তের হাতে।
এসব উপজেলা পাহাড়ী এলাকা হওয়ায় লাল মাটির কাঁদাপূর্ণ রাস্তায় সাধারন ও বাণিজ্যিকভাবে পণ্য আনা-নেওয়ার কাজটি ঘোড়ার গাড়ি দিয়েই করতে হয়। আবার সখের বশে বাপ-দাদার ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য প্রাইভেটকার বা মোটরসাইকেল থাকতেও ঘোড়া পালন করছে কেউ কেউ।
"ঘোড়ার গাড়ি আমাদের এলাকায় এতোটা প্রয়োজনীয় বাহন যে, খেঁটে খাওয়া মানুষগুলোর অনেকেই এ পেশায় আগ্রহী হয়ে উঠছে এবং দৈনিক গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা উপার্জন করা যায় ও করে এ গাড়ি দিয়ে"- কথাগুলো ধলাপাড়া ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ শরিফুল ইসলাম শরীফের।
ঘাটাইল উপজেলা প্রাণী সম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সোনিয়া আক্তার রুমি বলেন, "ঘাটাইলের পাহাড়ী এলাকাগুলোতে সত্যি-ই ঘোড়া ও ঘোড়ার গাড়ির ব্যবহার অনেক। আমরা মালিকদের ঘোড়ার পরিচর্যা ও রোগ বিষয়ে বরাবর-ই সচেতনতামূলক পরামর্শ দিয়ে আসছি। তবে, যেহেতু ঘোড়ার কোন খামার করা হয় না তাই বিচ্ছিন্নভাবে যারা ঘোড়া পালন করছেন সরকারিভাবে তাদের কোন অনুদান দেওয়ার সুযোগ নেই"।
আপনার মতামত লিখুন