ghatail.com
ঢাকা শনিবার, ২৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ / ১০ জুন, ২০২৩
ghatail.com
yummys

ভূঞাপুরে জরাজীর্ণ স্কুল ঘরে পাঠদান, দূর্ঘটনার আশঙ্কা


ghatail.com
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঘাটাইল ডট কম
০৭ মে, ২০২২ / ২৩০ বার পঠিত
ভূঞাপুরে জরাজীর্ণ স্কুল ঘরে পাঠদান, দূর্ঘটনার আশঙ্কা

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার তালুকদার সিরাজ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাকা ঘর না থাকায় পুরাতন টিনের ঘরগুলো ঝরাজীর্ণ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের জন্য বিপদজনক হিসাবে দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে গত ২৯ এপ্রিল সন্ধায় কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড করে দেয় পুরাতন টিনের ঘরগুলোর অধিকাংশ। বাকী অংশগুলো যে কোন মুহুর্তে বেড়া ও চালের টিন খসে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

স্কুলটির ঝরাজীর্ণ এই অবস্থায় আতঙ্ক নিয়ে ক্লাশ করতে হচ্ছে ৩০০ শিক্ষার্থীদের।

১৯৯৫ সালে সামশুল হক তালুকদার হীরা ১ একর জমির উপর নিজস্ব অর্থায়নে তার বাবার নামে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠাকালীন ২০ হাত দৈার্ঘের ৩টি টিনের ঘর দিয়ে শুরু হয় এর যাত্রা। প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পর ১ টি ঘর ভেঙ্গে নিজস্ব অর্থায়ণে পাকা ওয়াল করে সংস্কার করা হয়। সেই থেকে আজ অবদি এই বিদ্যালয়ে সরকারী অর্থায়নে গড়ে উঠেনি কোন পাকা ভবন।  

সরেজমিনে দেখা যায়, ১ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা কাঁচা টিনের ঝরাজীর্র্ণ ঘরগুলো। এ ঘরেই খুব কষ্ট করে ৩০০ জন শিক্ষার্থীর ক্লাশ নিচ্ছে শিক্ষকরা। 

জানা যায়, ১৯৯৫ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হওয়ার পর আজ অবদি এখানে সরকারী অর্থায়নে কোনো পাঁকা ভবন গড়ে উঠেনি। বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী লেখা-পড়া করছে। এ স্কুল থেকে প্রতি বছই উল্লেখ্যযোগ্য পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে স্কুলে সুনাম বয়ে আনছেন তারা।

বিদ্যালয়টিতে স্বনামধন্য ১৭ জন শিক্ষক-কর্মাচারি তাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় জ্ঞানের আলো বিকশিত করে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিলিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

জানা যায়, ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠাকালীন বিদ্যালয়টি তালুকদার সিরাজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নামে প্রতিষ্ঠাতা করা হয়। বিদ্যলয়টিতে নানা সমস্যার কারণে এবং ছাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ায় ১৯৯৭ সালে কম্বাইন্ড তালুকদার সিরাজ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে উপান্তর করে বিদ্যালয়টি পরিচালিত হচ্ছে।

১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে ভূঞাপুর-গোপালপুর আসনের সাংসদ খন্দকা আসাদুজ্জামান বিদ্যালয়টি এমপিও ভূক্ত (অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত) করে দেন। আবার ২০০৩ সালে দশম শ্রেণি পর্যন্ত এমপিও ভূক্ত করা হয়।

বিদ্যালয়টির এই করুণ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলুমুজ্জামান তালুকদার  বলেন আমরা পাঁচ ভাই স্কুল নির্মানের নিজস্ব অর্থায়ণে ও  সরকারী সকল শর্ত পূরণ করে ১৯৯৫ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠাতার পর থেকে আজ পর্যন্ত পাকা কোনো অবকাঠামো গড়ে উঠেনি এই বিদ্যালয়টিতে। 

এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রণালয় ও শিক্ষা  সংশ্লিষ্ট  অন্যান্য দ্প্তরে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে আবেদন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

বিদ্যালটিতে ১৭ জন শিক্ষক, কর্মচারী ও ৩০০ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মান ও পরীক্ষার ফলাফল তুলনামূলক অনেক ভালো। বিদ্যালয়টিতে সরকারি কোন অর্থ বরাদ্দ ও পাঁকা ভবন না পাওয়ায় নানা রকম সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। পর্যাপ্ত বেঞ্চ নেই, নেই প্রয়োজীয় চেয়ার–টেবিল।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলুমুজ্জামান তালুকদার আরো জানান, করোনাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম সাধ্যমত। তার আর হয়ে উঠছেনা কালবৈশাখী ছোবলে ঘর, চেয়ার-টেবিলসহ  অন্যান্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের ব্যপক ক্ষতিগ্রস্থ্য হওয়ায়। এমন সময় কালবৈশাখী ছোবল হানল, যে সময় ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে উপস্থিত হয়ে ক্লাস কার্য্যক্রমে অংশগ্রহন করা সময়। এখন এসএসসি ছাত্র-ছাত্রীদের ফরম পূরণ চলছে। আর মাস খানেক পরেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে তারা।

এ ব্যপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহআলম তালুকদার বলেন, আমরা স্থানীয় লোকদের সাথে কথা বলেছি। এলাকার মানুষ চায় পুরাতন ঝরাজীর্ণ ভবনগুলোর পাশাপাশি সেখানে সরকারি বরাদ্ধে নতুন ৪তলা ভবন করার জন্য। সরাকারি বরাদ্দ না পেলে কোন বিদ্যালয়ের অবকাঠামো গড়ে ওঠে না। বিদ্যালয়ের উন্নতিও হয় না।

আমরা আশা রাখি সরকার খুব শীঘ্রই ৪তলা একটি ভবন এই বিদ্যালয়ের নামে বরাদ্ধ দিবে ইনআশাল্লাহ।

তিনি বলেন, বর্তমানে কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ্য ঘরগুলো অতিদ্রুত মেরাতম করা যায় কিভাবে সে বিষয়ে সরকারী হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এছাড়াও  ক্লাস পরিচালনায় যেন কোন প্রকার ব্যাঘাত না ঘটে সে লক্ষেও বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহিনুল ইসলাম বলেন , ভূঞাপুর উপজেলায় ৫/৭ টি বিদ্যালয়ে পাঁকা অবকাঠামো এখনো পর্যন্ত হয়নি। যে সকল বিদ্যালযে এখনোও সরকারী কোন অকাঠামো একেবায়ে পায়নি সকল বিদ্যালয়ে যাতে অগ্রাধীকার ভিত্তিতে কাজ করা যায় সে চেষ্টা করা হবে।

(নিজস্ব প্রতিবেদক, ঘাটাইল ডট কম)/-