টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দিন দিন বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়ে পরিস্থিতি চরম অবনতি ঘটছে। গত ২৪ ঘন্টায় বংশাই ও লৌহজং নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় বসত ঘর এবং বাড়ি বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
বিশেষ করে মির্জাপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এতে করে পানি বন্দী দেড় হাজার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এদিকে পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বন্যা কবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বন্যা পানিতে বাড়ি-ঘর তলিয়ে যাওয়ার কারণে সওদাগরপাড়ার ৩৫০ টিরও বেশি পরিবার গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে নিকটবর্তী বংশাই ব্রীজে।
এতে করে বন্যা কবলিত বিশাল জনগোষ্ঠীর মাঝে নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। একই সাথে গো খাদ্যের অভাবে গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে পড়েছে অনেকেই।
এছাড়াও বন্যা দুর্গত পরিবারের শিশু ও বয়স্করা পানিতে পড়ে যাওয়ার আশংকায় রয়েছেন। সেই সাথে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের সংক্রমণের সম্ভাবনা আছে। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে বিষাক্ত সাপের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় এবং গাদাগাদি করে থাকার কারণে করোনার বিস্তার লাভের শংকা রয়েছে। যার ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে অতি কষ্টে জীবনযাপন করছে অসহায় এসব পরিবার।
বন্যা দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করে জানান, রাতের আঁধারে সামর্থ্যবান অনেককেই স্বজনপ্রীতি করে জনপ্রতিনিধিরা ত্রাণ বিতরণ করলেও ব্রীজে আশ্রয় নেয়া মানুষেরা কোনো খাদ্য সহায়তা পাননি।
তারা দাবি করেন সরকারের দেয়া ত্রাণ সহায়তার সুষম বণ্টন করা হলেও তাদের কাছে এসে সেই ত্রাণ পৌঁছায় না। এমতাবস্থায় দু-এক বেলা কোনোমতে খেয়ে জীবন অতিবাহিত করছেন এসব নিম্ন আয়ের মানুষ।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেক বলেন, তিনি বন্যা কবলিত ওই এলাকাটি পরিদর্শন করে দুর্গত মানুষের সাথে কথা বলে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। এসময় তিনি তাদের বন্যার পানি থেকে শিশু ও বয়স্কদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। কেউ ত্রাণ পেয়ে না থাকলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এছাড়া মির্জাপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যায় ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
(মির্জাপুর সংবাদদাতা, ঘাটাইল ডট কম)/-